এবারের উপহার নব-প্রবাহ - হ্যাঁ, আপাতভাবে এসংখ্যা প্রেমের, রঙের, নতুনের। আর অবশ্যই আমার-আপনার সবার– বাংলাভাষার। সেইসঙ্গে সর্বধর্মসমন্বয়েরও। আচ্ছা বলুন তো, প্রেম বললেই কোন অনুষঙ্গের কথা মনে আসে? ঠিক, চাঁদ আর জ্যোৎস্না। রবীন্দ্রভাবনায় জ্যোৎস্নার উত্তরণ- বড্ড বেশি জটিল মনে হচ্ছে না কি? কিন্তু প্রাবন্ধিক অনুপম দাস যে বড় সুন্দর করে বিষয়টা বুঝিয়ে দিয়েছেন ‘জীবনপ্রবাহ’-র প্রবন্ধটিতে, কথার কচকচিতে না গিয়ে অনুভূতিগুলোকে সহজ করে লিখে। সহজ লেখার কথা উঠলই যখন, আমাদের মাতৃভাষার মতো এমন সরল, মিষ্টি ভাষা আর পাব কোথায়? এ যে মায়ের বুলি, তাই তো বাংলাভাষার জন্য জান কবুল করেছিলেন একুশের শহীদরা। সে ঘটনা স্মরণে রেখে ‘সময়প্রবাহ’ “মোহনা”। আচ্ছা, নারীমুক্তির আন্দোলনে তার নিজের প্রসাধনও যে অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে, সেকথা ভেবে দেখেছেন কখনও? দিগন্ত পাল ভেবেছেন- তাই তো লিপস্টিকের ইতিকথা আর তার আকর্ষণ-বিকর্ষণ নিয়ে মনুষ্যমস্তিষ্কের জটিল কীর্তিকলাপ তুলে ধরেছেন তাঁর ‘সময়প্রবাহ’ “বর্ণময় স্পর্শ”-তে। নববর্ষ সংখ্যা আর “বঙ্গে সেকালের নববর্ষ” নিয়ে তৃতীয় ‘সময়প্রবাহ’ থাকবে না তাও কি হয়? পার্বণ যত, তার স্মৃতিও তত; তাই এবারে ডবল ‘আটপৌরে‘- একটিতে চট্টগ্রামের ফুলবিউ-মুড়বিউ-হালখাতার মেদুর স্মৃতিচারণ, আরেকটিতে “সেকালের হোলি”র গপ্পো। কিন্তু নববর্ষ মানে কি শুধুই পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ? মোটেই না, চৈত্র সংক্রান্তি, গাজন, চড়ক এগুলো ছাড়া বাংলার পার্বণ পূর্ণতা পাবেই না। আরে, প্রচ্ছদটা দেখুনই না ভালো করে। তাই ‘কলিকাতা ইতিকথা’য় এবারের লেখা কলকাতার চড়ক। রঙের মাসে ‘কাব্যপ্রবাহ’ বিভাগ সত্যিই বর্ণময়- থাকল নানান স্বাদের ১৩টি মনমাতানো কবিতা। এসংখ্যায় সমাপ্ত হলো তিনটে ‘প্রবহমান গল্প’- “অলকেশ” যেটা শিশুকিশোরে দেওয়া যায়নি বিষয় জটিলতার কারণে, আর “রুকুর আকাশ” ও “বাহন বিভ্রাট” যে দুটি গতসংখ্যায় অর্ধসমাপ্ত থেকে গিয়েছিল। তিনটে গল্পই কিন্তু একসূত্রে গাঁথা, কিসে বলুনতো? প্রত্যেকটাই নতুন করে শুরু হওয়ার কাহিনী, ঠিক বছরপয়লার খাতাটার মতো। অর্ধসমাপ্তির কথা উঠতেই মনে পড়ল বাঙালির আরেক পার্বণ -ফুটবলের কথা। ফুটবল নিয়ে দমফাটা হাসির গল্প “কানুকার কেরামতি” পড়েছিলেন নিশ্চয় শিশুকিশোর সংখ্যায়? মনে আছে তো, ঠিক ফার্স্টহাফের বিরতিতে এসে গল্প থেমে গিয়েছিল? এবার তাড়াতাড়ি সেকেন্ডহাফের গল্পটা পড়ে ফেলুন আর ‘খুশির প্রবাহে’ লুটোপুটি খান। খুশি তো শুধু খেলা দেখে বা সাজগোজ করলেই হওয়া যায়না, আসল খুশি তখনই আসে যখন আমরা হাতের সামনে কাঙ্খিত বস্তুটিকে পেয়ে যাই। কিন্তু পাব কীকরে? কে এগিয়ে দেবে? কেন, আলাদিনের জিন বা নিদেনপক্ষে ‘গল্প হলেও সত্যি’র ধনঞ্জয়ের নাম শোনেননি? এই দ্বিতীয় ব্যক্তিটিকে, বলাভালো, উক্ত সিনেমাটিকে নিয়েই এবারের ‘সিনেম্যাটিক’। সিনেমা দেখতে কে না ভালবাসে, বিশেষ করে এন্টারটেনিং ম্যুভি যাতে অ্যাকশন, থ্রিল, রোম্যান্স সবকিছু একসাথে থাকে। এরকমই দু’দুটো সুপারহিট গপ্পো এবারের ‘কাহিনীপ্রবাহ’তে-“নরকের প্রহরী” আর “অতৃপ্ত”। তবে শুধু বাণিজ্যিক আমোদই নয়, পরম্পরা বজায় রেখে থাকল তিনটি সামাজিক কাহিনীও, পরিবেশ বিষয়ক গল্প “ডোবা”, বর্তমান সময়ের অতিপ্রয়োজনীয় সাইবার সচেতনতার গল্প “পুরস্কার” আর একটি অত্যন্ত মনছোঁয়া কাহিনী “মুক্তরাম”। সামাজিক কাহিনীর কথায় বলে নেওয়া যাক ‘প্রবহমান উপন্যাস’ “কাটাঘুড়ি আট”এর সুমির কথা। গতসংখ্যায় আমরা দেখেছি সে শৈশব উত্তীর্ণ হয়ে কৈশোরে পা রেখেছে। এই সংখ্যায় সে ‘অফিসিয়ালি’ ‘টিনএজার’, হবে কি তার স্বপ্ন সফল? বলেছি না নববর্ষ সংখ্যা পাতায় পাতায় নতুনভাবে শুরুর কথা বলেছে- উপন্যাসই বা বাদ যায় কেন? গল্পের মোড় ঘুরেছে এই সংখ্যায়। আবার আসি আমাদের অনন্য বিভাগ ‘কথা হোক’-এ। প্রেম মানেই সম্পর্ক, সম্পর্ক মানেই টানাপোড়েন বিশেষ করে সেখানে যখন কোন “অদৃশ্য ত্রিকোণ” তৈরি হয়। এমাসে তো গুড ফ্রাইডে আর রমজান দুই-ই ছিল, তাই ‘হেসেখেলে হেঁশেল’-এ ঈদের মিষ্টি ‘শীর কোর্মা’। গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত সকলেরই- তাই একটু ঠাণ্ডা আমেজ দিতে এবারের ‘হারিয়ে যাওয়া পেশা’য় “বরফ সংগ্রহ” - বরফ কাটা, বরফ সরবরাহ, ‘আইসম্যান’- পড়ে দেখুন, গরম একটুও কম লাগে কিনা! শেষ করা যাক বাঙালির আরেক পার্বণ বেড়ানো দিয়ে। ‘প্রবাহে ভেসে’-তে এবার বাংলার নিজস্ব স্থাপত্যশৈলী টেরাকোটা দেখার গল্প হুগলীর দশঘরা গ্রামে। আর ‘ম্যাপ পয়েন্টিং’? সে এবার “রঙের সরণি বেয়ে” পৌঁছে গেছে ব্রজধাম, দ্বারকা, মায় খাটু শ্যামের ফাগুন মেলাতেও
A new age publishing house that promises to inspire and support creativity in budding writers.