প্রবাহ বিরাট একটা ছক্কা হাঁকিয়ে আবার পাঠকদের দরবারে এল, ‘মনীষী সংখ্যা নিয়ে। ইতিমধ্যেই ‘প্রবাহ’র ছ-ছটা সংখ্যা পাঠকদের আদর আর ভালোবাসা নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে। এবার মনীষীদের স্মরণ করার পালা।
তবে কি এ সংখ্যা শুধুমাত্র প্রবন্ধতেই সীমিত? না-না, তা কখনো হয়? সাহিত্য পত্রিকায় গল্প-কবিতা-উপন্যাস থাকবে না? প্রবন্ধের মতোই, এবারের কবিতাগুলিও মূলত মনীষী স্মরণেই নিবেদিত, শুধু শ্রাবণধারা নিয়ে লেখা “প্রতীক্ষা” কবিতাটি বাদে। এবারে ছোটগল্প থাকছে না পরিসরের অভাবে কিন্তু শুরু হচ্ছে টাটকা দুটো ‘প্রবহমান গল্প’ – “অবেলা” আর “যাত্রাপথ”। গতসংখ্যার বিরতির পর দ্বিতীয় পর্বে এগোল শিশু-কিশোর সংখ্যায় শুরু হওয়া ধারাবাহিক “পিরামিড রহস্য”। যেহেতু মনীষী সংখ্যার পাঠক মূলত বয়স্ক আর ছোটরা, সেকথা মাথায় রেখেই এই তিনটি গল্পের বিষয়-নির্বাচন। আষাঢ়ের প্রধান উৎসব রথযাত্রার পটভূমিও রয়েছে এদের একটিতে।
রথযাত্রার পটভূমি শুধু গল্পে নয়, এবারের ‘প্রবাহে ভেসে’র ভ্রমণকাহিনীও পুরীর রথযাত্রা নিয়েই। আর শাক্যসিংহের জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষ্যে ‘ম্যাপ পয়েন্টিং’-এ থাকল “দক্ষিণদ্বীপে ধম্মশরণ”-এর বিচিত্র ভ্রমণ অভিজ্ঞতা।
নতুন বিভাগ “বড়মানুষের ছেলেমানুষী”র কথা তো বললাম, আরেকটা নতুন আকর্ষণও এবারে যোগ হয়েছে – “ছোটদের আঁকা”, এবারের বিষয় “মনীষী চিত্র”। যাহোক, ফিরে আসি চেনাজানা বিভাগগুলোর খবরাখবরে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মমাস উপলক্ষ্যে এবারের ‘সেই বইটা’র উপজীব্য তাঁর কালজয়ী উপন্যাস ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’। রবীন্দ্রনাথ–সত্যজিতকে একসাথে স্মরণ করার জন্য ‘সিনেম্যাটিক’-এর চেয়ে প্রাসঙ্গিক বিভাগ আর কী হতে পারে? তাই এবারের নিবেদন ‘তিনকন্যা’ সিনেমা নিয়ে। ‘কলকাতা ইতিকথা’য় এবারে রইল “মনীষীদের বসতবাড়ি”র গল্প। রবীন্দ্রনাথ মানেই জোড়াসাঁকো, শিলাইদহ, পুরনো কলকাতা… যাতে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে পাঙ্খাওয়ালাদের কাহিনী। এবারের ‘হারিয়ে যাওয়া পেশা’ তাদের নিয়েই। এই সংখ্যার প্রকাশকালে শুরু হয়েছিল ক্রীড়াজগতের রাজসূয়যজ্ঞ অলিম্পিক গেমস- ‘জানেন কি’তে এবারের লেখা সেসব নিয়েই। ‘আটপৌরে’তে থাকল প্রৌঢ়-যুগলের দিনান্তের কথোপকথন।
আপনারা তো জানেনই ‘কথা হোক’ আমাদের অনন্য বিভাগ – প্রতিবারের মতো এবারেও থাকল গত সংখ্যার প্রশ্নের উত্তর আর নতুন কিছু প্রশ্ন। তবে এবারে এত প্রবন্ধের ভিড়ে আর মনস্তত্বের প্রবন্ধ রাখা হয়নি, মনীষীদের কথা শুনলে এমনিতেই যে মন ভালো হয়ে যায়।
সবশেষে আসি এ সংখ্যার মুখ্য আকর্ষণের কথায় - প্রবহমান উপন্যাস “কাটাঘুড়ি আট”এর সমাপ্তি। ‘আঠারো বছর বয়স’-এর স্রষ্টার প্রয়াণ সংখ্যায় উপন্যাসের নায়িকা সুমি শুধু আঠারতেই পা রাখেনি, সে স্বপ্ন দেখিয়েছে আগামীর আট-কেও। সাতটি সংখ্যা জুড়ে প্রবাহিত এই উপন্যাস কেমন লাগল পাঠকদের, জানার অপেক্ষায় রয়েছি কিন্তু আমরা। আমাদের ইমেল আইডি-ফোন নম্বর তো আপনাদের মুঠোফোনে রয়েছেই, নেহাতই হাতের কাছে না পেলে উল্টে দেখে নিন বইয়ের শেষ মলাটটা।
‘শেষ হয়ে হইল না শেষ’। লক্ষ্য করেছেন নিশ্চয়, এবারের প্রচ্ছদ আর অলঙ্করণ জুড়ে রয়েছে ‘টাইপ আর্ট’ দিয়ে বানানো মনীষীদের পোট্রেট। যাঁরা বিভিন্ন বইমেলায় বা অনুষ্ঠানে এই পোট্রেটগুলো সংগ্রহ করেছেন তাঁরা হয়তো জানেন, বাকিদের জ্ঞাতার্থে রইল একটা ‘অলঙ্করণ কথা’ – পড়ে দেখবেন কিন্তু।
A new age publishing house that promises to inspire and support creativity in budding writers.