জুন সংখ্যায় প্রবাহর সৃজনের পর তার দুই ডানা মেলে প্রবাহ উড়ান নিল জুলাই-আগস্ট সংখ্যায়, ঠিক জাতীয় মুক্তির মাসে। এমনিতেই জুলাই আর আগস্ট ভারতীয় বিশেষ করে বাঙালিদের খুব মনের কাছাকাছি - প্রথমত আষাঢ় মাস – বর্ষাকাল এলে অনেক অকবিও কবিত্ব করতে থাকেন, অতএব প্রবাহ-র ডাকসাইটে লেখককুল কাব্যি করবেন না তাও কি হয়! তারপর স্বাধীনতা দিবস, তারও ওপর কবিগুরুর প্রয়াণ দিবস – মনখারাপিয়া দিন, কিন্তু আবেগপ্রবণ বাঙালি সবকিছুতেই যে উৎসবে মাতে! তাই এই সংখ্যায় কিছু কিছু “সময়প্রবাহ” অর্থাৎ সময়োপযোগী প্রবন্ধ না দিয়ে থাকতে পারলাম না যেমন ‘আষাঢ় লগনে’ আর ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ‘তোমাতে আমরা লভিয়া জনম’। রবীন্দ্রপ্রয়াণ নিয়ে প্রচুর গতানুগতিক লেখা এবং অনুষ্ঠান চলছে বছরের পর বছর; আমরা নিয়ে এলাম একদম ভিন্ন স্বাদের “জীবনপ্রবাহ” খোদ আকাশবাণীর আর্কাইভ থেকে রবিঠাকুরের প্রয়াণ দিনের বিস্তারিত ধারাবিবরণী - ‘২২শে শ্রাবণ ও কলকাতা বেতার‘। “খুশির প্রবাহ” অর্থাৎ রম্যরচনাতে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লেখক একটি দমফাটা হাসির গল্প লিখেছেন চ্যাটজিপিটি নিয়ে। থাকল ১২টি “কাব্যপ্রবাহ” অর্থাৎ কবিতা, ৩টি “কাহিনীপ্রবাহ” মানে ছোটগল্প। এছাড়া চলবে গত সংখ্যায় শুরু হওয়া চারটি “প্রবহমান (মনে নেই? ধারাবাহিক) গল্প” – তার মধ্যে একটি এই সংখ্যায় সমাপ্ত হচ্ছে, বাকি তিনটি শেষ হবে পরের সংখ্যায়। প্রসঙ্গত বলে নিই, ৱ্যাগিং গল্পটি নিছকই লেখকের ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ - এর সঙ্গে সমসাময়িক মর্মান্তিক ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই আর প্রেরণার পক্ষ থেকে আমরা ৱ্যাগিং-এর তীব্র নিন্দা ও বিরোধিতা করছি। ফিরে আসি প্রবাহ-তে। এই সংখ্যায় শুরু হল আরেকটি টাটকা “প্রবহমান গল্প”। এছাড়াও থাকছে একটি নতুন “প্রবাহে ভেসে” – বৃষ্টিভেজা মেঘালয়ে ভ্রমণের নান্দনিক অভিজ্ঞতা , যেটি চলবে পরের সংখ্যা অবধি। বলা বাহুল্য, চলতে থাকবে “প্রবহমান উপন্যাস” ‘কাটাঘুড়ি আট’ – সেই যে, সদ্য আটে পা দেওয়া একটি বালিকার জীবন ও সমাজের নানা দৈন্যতা ও কালিমার মুখোমুখি হওয়ার সামাজিক কাহিনী। “ভিন্ন প্রবাহ” আমাদের বিশেষত্ব – তাই এই সংখ্যাতেও থাকল “আটপৌরে” মানে ঘরোয়া স্মৃতিচারণ, “সিনেম্যাটিক” আর “সেই বইটা” মানে বিশেষ সিনেমা আর বই নিয়ে লেখা যার প্রভাব লেখকের জীবনে অনেক। ভুলবেন না “ম্যাপ পয়েন্টিং” পড়তে, এক বিচিত্র ভ্রমণ অভিজ্ঞতা - আগেরবার ছিল হাড় হিম করা গল্প ‘তুষার নেকড়ের চোখ’ আর এবার থাকছে বরফের দেশের মজারু সাতকাহন ‘জমে জমাট জাম্বরি’। নতুন সংযোজন “হারিয়ে যাওয়া পেশা” – নাম থেকেই বুঝতে পারছেন এখানে সেইসব পেশা নিয়ে লেখা হবে যেগুলো সমাজ থেকে অবলুপ্ত হলেও স্মৃতির মণিকোঠায় আজও বিরাজমান। টুকরোটাকরা তো থাকছেই – “হেসেখেলে হেঁশেল”-এ দেশবিদেশের চটজলদি রান্নার রেসিপি, “জানেন কি”তে হিরোশিমা দিবস স্মরণে একটি আকর্ষণীয় লেখা “হিরোশিমা বনসাই এবং ধাঁধা, সুডোকু, মনীষী কৌতুকী ইত্যাদি। আরেকটি বিশেষ আকর্ষণের কথা না বললেই নয়, “কথা হোক”। আজকাল আমাদের হাজারে হাজারে ভার্চুয়াল বন্ধু, কিন্তু আমরা আগের থেকেও অনেক বেশি একা। তাই প্রবাহ আমন্ত্রণ জানিয়েছিল পাঠকদের, লিঙ্গ, বয়স, সামাজিক অবস্থান, পেশা, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে তাঁদের প্রশ্ন বা সমস্যা, অথবা শুধুমাত্র মনের কথা লিখে পাঠাতে। নামপ্রকাশ না করেই সেসব প্রকাশ হলো “কথা হোক” সেকশনে। পরবর্তী সংখ্যায় প্রশ্নের উত্তর দেবেন আমাদের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বন্ধুরা। সকলের কাছে অনুরোধ – একা হয়ে যাবেন না, আমরা হাত বাড়িয়ে আছি। আপনারাও এক পা এগোন। 'লিপ অফ ফেইথ' আপ্তবাক্যটি শুনেছেন নিশ্চয় - নিয়েই দেখুন না সেই বিশ্বাসের উড়ান। আর নিজের মনকে প্রস্তুত করার ফাঁকে পড়ে ফেলুন একটি সুন্দর প্রবন্ধ - 'একাকিত্ব'।
A new age publishing house that promises to inspire and support creativity in budding writers.